আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) হোরমোযগান প্রদেশ সফরে গিয়ে পেজেশকিয়ান বলেন, “তেহরান, কারাজ ও গাজভিনসহ আশপাশের অঞ্চলে পানি সংকট চরমে পৌঁছেছে।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সমস্যা চললেও কার্যকর সমাধান হয়নি।” তিনি জানান, রাজধানী স্থানান্তরের প্রস্তাব গত বছরই সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাছে তোলা হয়েছিল। যদিও সে সময় সমালোচনা হয়েছিল, তবে এখন আর দেরি করা সম্ভব নয়।
পানি সংকট মারাত্মক
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বর্তমানে তেহরানে ১ কোটির বেশি মানুষ বসবাস করে এবং শহরটি একাই ইরানের প্রায় এক-চতুর্থাংশ পানি ব্যবহার করে। অথচ রাজধানীর পানি সরবরাহ ভয়াবহভাবে কমে গেছে। সাধারণত ৭০ শতাংশ পানি আসে বাঁধ থেকে এবং ৩০ শতাংশ ভূগর্ভস্থ উৎস থেকে। কিন্তু বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় বাঁধগুলো দ্রুত অক্ষম হয়ে পড়ছে। ফলে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ বাড়ছে।
পেজেশকিয়ান জানান, ২০২৪ সালে দেশে বৃষ্টিপাত হয়েছিল মাত্র ১৪০ মিলিমিটার, যেখানে স্বাভাবিক মান ২৬০ মিলিমিটার। অর্থাৎ ৫০–৬০ শতাংশ বৃষ্টি কমেছে। চলতি বছর পরিস্থিতি আরও খারাপ, বৃষ্টিপাত নেমে এসেছে ১০০ মিলিমিটারের নিচে। এতে বাঁধে পানি সঞ্চয় কমছে, কূপ শুকিয়ে যাচ্ছে এবং অন্য অঞ্চল থেকে পানি আনার খরচ প্রতি ঘনমিটার প্রায় ৪ ইউরোতে পৌঁছেছে।
ভূমিধসের হুমকি
ইরানের প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে বলেন, “অযথা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রাকৃতিক সম্পদের ভারসাম্য নষ্ট হলে শেষ পর্যন্ত ধ্বংস ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।” তাঁর দাবি, তেহরানের কিছু এলাকায় বছরে ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত ভূমিধস হচ্ছে, যা ভয়াবহ বিপর্যয়ের ইঙ্গিত বহন করছে।
নতুন রাজধানীর পরিকল্পনা
পেজেশকিয়ানের মতে, নতুন রাজধানী দক্ষিণাঞ্চলের পারস্য উপসাগর তীরবর্তী এলাকায় হলে তা বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নতুন গতি আনবে। তাঁর ভাষায়, “এই অঞ্চল উন্মুক্ত সমুদ্রের সরাসরি প্রবেশাধিকার দেয়, ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।”
এর আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিসহ একাধিক নেতা রাজধানী সরানোর পরিকল্পনা নিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। তবে বর্তমান পানি সংকট ও ভূমিধসের ঝুঁকি ইরানকে এবার কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করছে।
Your Comment